সর্বনামের ব্যবহার

সর্বনামের বৈচিত্রপূর্ণ ব্যবহার

অন্য যে কোনো ভাষার মতো, আরবি ভাষায়ও সর্বনামের বৈচিত্রপূর্ণ ব্যবহার রয়েছে। সর্বনাম বাক্যাংশ গঠনে ব্যবহৃত হয় এবং বাক্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । নিম্নে সর্বনামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার দেখবো ইন শা আল্লাহ :

যুক্ত সর্বনাম মুদফ ইলাইহি হিসাবে

ইসমের সাথে যখনই যুক্ত সর্বনাম আসে, তখনই মুদফ ইলাইহি হিসাবে কাজ করে। পবিত্র কুরআনুল কারীম থেকে কিছু উদাহরণ দেয়া হলো :

মুদফ ইলাইহিমুদফবাংলা অর্থমুদফ ও মুদফ ইলাইহি
كَرَبُّতোমার প্রভুرَبُّكَ
هُمْكَيْدَতাদের চক্রান্তكَيْدَهُمْ
هِمْصَلَاتِতাদের নামাযصَلَاتِهِمْ
هُمَالُতার সম্পদمَالُهُ
هَاجِيدِতার গলাجِيدِهَا

যুক্ত সর্বনাম মাজরূর হিসাবে

হারফে জারের সাথে যখনই যুক্ত সর্বনাম আসে, তখনই মাজরূর হিসাবে কাজ করে। পবিত্র কুরআনুল কারীম থেকে কিছু উদাহরণ দেয়া হলো :

মাজরূরহারফে জারবাংলা অর্থজার্ মাজরূর
هَامِنْতার থেকেمِنْهَا
هِمْفِيতাদের মধ্যেفِيهِمْ
هَافِيএটার মধ্যেفِيهَا
هِمْعَلَيْতাদের উপরعَلَيْهِمْ
كَإِلَيْতোমার কাছেإِلَيْكَ
نِّيعَنِّيআমার ব্যাপারেعَنِّي
هُمْعَنْতাদের ব্যাপারেعَنْهُمْ

যুক্ত সর্বনাম হারফুন নাসবের ইসম হিসাবে

হারফুন নাসবের সাথে যখনই যুক্ত সর্বনাম আসে, তখনই হারফুন নাসবের ইসম/ইসমুহা হিসাবে কাজ করে। পবিত্র কুরআনুল কারীম থেকে কিছু উদাহরণ দেয়া হলো :

ইহার ইসমহারফুন নাসববাংলা অর্থহারফুন নাসব ও
ইহার ইসম
هُمْإِنَّনিশ্চয়ই তারাإِنَّهُمْ
يإِنِّনিশ্চয়ই আমিإِنِّي
كَإِنَّনিশ্চয়ই তুমিإِنَّكَ
هُمْكَأَنَّযেন তারাكَأَنَّهُمْ
هُمْبِأَنَّকারণ তারাبِأَنَّهُمْ
كُمْلَعَلَّ যাতে তোমরাلَعَلَّكُمْ 
هُمْلَعَلَّযাতে তারাلَعَلَّهُمْ
نَالَيْتَ হায়, আমরাلَيْتَنَا 

যুক্ত সর্বনাম বিশেষ মুদফের মুদফ ইলাইহি হিসাবে

বিশেষ মুদফ হলো এমন কিছু ইসম যা মূলত সময়/স্থান সম্পর্কিত এবং এই ইসমগুলো যখন অন্য কোন ইসমের পূর্বে আসে তখন পরবর্তী ইসমগুলোকে মুদফ ইলাইহি جَر (Status) অবস্থায় নিয়ে যায় অর্থাৎ জার্ ফর্ম/মাজরূর হয়। সর্বনাম যেহেতু ইসমের অন্তর্ভুক্ত, সর্বনামও বিশেষ মুদফের মুদফ ইলাইহি হিসাবে কাজ করতে পারে। পবিত্র কুরআনুল কারীম থেকে কিছু উদাহরণ দেয়া হলো :

মুদফ ইলাইহিবিশেষ মুদফবাংলা অর্থবিশেষ মুদফ ও মুদফ
ইলাইহি বাক্যাংশ
كُمفَوْقَতোমাদের উপরেفَوْقَكُمْ
هُأَمَامَতার সামনেأَمَامَهُ
هُمْخَلْفَতাদের পিছনেخَلْفَهُمْ
كُمبَيْنَতোমাদের মধ্যেبَيْنَكُم
كُمْحَوْلَতোমাদের চারপাশেحَوْلَكُمْ
كَلَدُنْতোমার পক্ষلَدُنْكَ
كُمْبَعْضُতোমরা পরস্পরেরبَعْضُكُمْ
كُمْاَیُّতোমাদের মধ্যে কে/কোনজনاَیُّكُمْ

যুক্ত সর্বনাম ফি’লের মাফউল হিসাবে

ফি’লের সাথে যখন যুক্ত সর্বনাম আসে, তখন যুক্ত সর্বনাম মাফউলুন বিহি/কর্ম হিসাবে কাজ করে।ফি’লকে কাকে দ্বারা প্রশ্ন করলে এই যুক্ত সর্বনামটি পাওয়া যায় তাই এটাকে মাফউলুন বিহি/কর্ম বলে।পবিত্র কুরআনুল কারীম থেকে কিছু উদাহরণ দেয়া হলো :

মাফউলফি’লবাংলা অর্থ
كُمْجَعَلْنَاআমরা তোমাদের বানিয়েছিجَعَلْنَاكُمْ
كُمْآتَيْنَاআমরা তোমাদের দিয়েছিآتَيْنَاكُمْ
هُمْجَاءَসে এসেছিলো তাদের কাছেجَاءَهُمْ
هُمْظَلَمْنَاআমরা তাদের উপর জুলুম করেছিলামظَلَمْنَاهُمْ

মুক্ত সর্বনাম নামবাচক বাক্যে মুবতাদা হিসাবে

বাংলা অর্থখবরমুবতাদা
তারা হেদায়েত প্রাপ্তالْمُهْتَدُونَهُمْ
সে সৎকর্মশীলمُحْسِنٌهُوَ
তোমরা অন্যায়কারীظَالِمُونَأَنتُمْ
আমরা শান্তিকামীمُصْلِحُونَنَحْنُ
তুমি রিযিকদাতাদের মধ্যে সর্বোত্তমخَيْرُ الرَّازِقِينَ أَنتَ
তুমি পরিত্রাণকারীদের মধ্যে সর্বোত্তমخَيْرُ الْغَافِرِينَأَنتَ

মুক্ত সর্বনাম ক্রিয়াবাচক বাক্যে ফি’লের ফাই’ল হিসাবে

আরবি ব্যাকরণে প্রতিটা ফি’লের মধ্যে একটি লুকায়িত সর্বনাম থাকে। যদি ফি’লটি একটিভ ফর্মে থাকে এবং কোনো বাহ্যিক ফাই’ল না থাকে, তখন লুকায়িত সর্বনামটি ফি’লের ফাই’ল হিসাবে কাজ করে।পবিত্র কুরআনুল কারীম থেকে কিছু উদাহরণ দেয়া হলো :

ফাই’লবাংলা অর্থআরবি বাক্য
هُوَতিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন خَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ
أَنتُمْতখন তোমরা তোমাদের জন্যে
কোনো কর্মবিধায়ক পাবে না
ثُمَّ لَا تَجِدُوا لَكُمْ وَكِيلً
أَنتُمْতোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের
মধ্যে প্রবেশ করো
ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً 
نَحْنُআমরা রাত্রি ও দিনকে দুটি
নিদর্শন করেছি
وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ آيَتَيْنِ
هُمْকিন্তু তারা জানে নাوَلَٰكِنْ لَا يَعْلَمُونَ

মুক্ত সর্বনাম ক্রিয়াবাচক বাক্যে ফি’লের নায়েবুল ফাই’ল হিসাবে

আরবি ব্যাকরণে প্রতিটা ফি’লের মধ্যে একটি লুকায়িত সর্বনাম থাকে। যদি ফি’লটি Passive ফর্মে থাকে এবং কোনো বাহ্যিক নায়েবুল ফাই’ল না থাকে, তখন লুকায়িত সর্বনামটি ফি’লের নায়েবুল ফাই’ল হিসাবে কাজ করে।

নায়েবুল ফাই’লফি’লবাংলা অর্থ
هُوَقِيلَতাকে বলা হলো জান্নাতে
প্রবেশ কর
قِيلَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ 
هُوَزُيِّنَ এটা ফিরআউনের জন্য
চিত্তাকর্ষক করা হয়েছিল
زُيِّنَ لِفِرْعَوْنَ 

আপনার যদি নাহু এবং ছারফ/Sarf সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা থাকে, তাহলে পুরো পোস্টটি বুঝতে পারবেন। অন্যথায় আংশিক বুঝবেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!