১. ইসম মাওসুল / الاسم الموصول ইসম মাওসুল হলো একটি অসম্পূর্ণ অর্থপূর্ণ اسم। এই কারণে, এটি কখনও একা দেখা যায় না। এটি সর্বদা একটি যৌগিক ইসম/اسم এর অংশ হিসেবে দেখা যায় ।
২. সীলাহ / الصلة সীলাহ হলো একটি পূর্ণ বাক্য যা সরাসরি الاسم الموصول এর পরে আসে। যখন একটি শব্দ এবং তার পরবর্তী শব্দের মধ্যে আর কোন ব্যাকরণিক সম্পর্ক থাকে না, তখন الصلة শেষ হয়। অন্য কথায়, বাক্য শেষ হলে الصلة শেষ হয়।
ইসম মাওসুল এবং সীলাহ একে অপরের সাথে অবিচ্ছেদ্য। ব্যাকরণ এবং অর্থের দিক থেকে তারা এতটাই ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত যে, তাদের একটি একক যৌগিক اسم হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পবিত্র কুরআনুল কারীমে বহুল ব্যবহৃত ইসম মাওসুলগুলো হলো নিম্নরূপ :
ইসম মাওসুল ও সীলাহর ব্যবহার এই যৌগিক ইসম/اسم (ইসম মাওসুল ও সীলাহ) বাক্যের মধ্যে নিম্নোক্ত ভূমিকা পালন করতে পারে :
মুবতাদা হিসাবে খবর হিসাবে ফা’ইল হিসাবে মাফ’উল হিসাবে শুধু তাই নয়, এই যৌগিক ইসম বাক্যাংশেও নিম্নোক্ত ভূমিকা পালন করতে পারে :
সিফাহ হিসাবে মুদফ ইলাইহি হিসাবে ইসম ইন্না হিসাবে মাজরূর হিসাবে ইসম মাওসুল ও সীলাহর ব্যবহারের উদাহরণ পবিত্র কুরআনুল কারীম থেকে ইসম মাওসুল ও সীলাহর ব্যবহারের উদাহরণ
১. মুবতাদা হিসাবে الَّذِينَ كَفَرُوا يُكَذِّبُونَ যারা অবিশ্বাস করেছে তারা মিথ্যারোপ করে الَّذِينَ كَفَرُوا فِي تَكْذِيبٍযারা অবিশ্বাস করেছে তারা মিথ্যারোপ করায় রত الَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِنَا هُمْ أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই হতভাগা إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُولَٰئِكَ هُمْ خَيْرُ الْبَرِيَّةِ নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারাই সৃষ্টির সেরা। مَا تُخْفِي صُدُورُهُمْ أَكْبَرُতাদের অন্তরে যা লুকোনো আছে তা বেশী গুরুতর
২. খবর হিসাবে ذَٰلِكَ الَّذِي يَدُعُّ الْيَتِيمَ সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে হাঁকিয়ে দেয় هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُم اللَّهُ الَّذِي أَرْسَلَ الرِّيَاحَ আল্লাহ্ই তিনি যিনি বায়ুপ্রবাহ পাঠান
৩. ফা’ইল হিসাবে قَدْ خَابَ مَنْ دَسَّاهَا সে নিশ্চয় ব্যর্থ হয়েছে, যে নিজেকে কলুষিত করেছে قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا সে নিশ্চয় সফল হয়েছে, যে নিজেকে পবিত্র করেছে قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّىٰ সে নিশ্চয় সফল হয়েছে, যে নিজেকে পবিত্র করেছে سَيَذَّكَّرُ مَن يَخْشَىٰ যে ভয় করে, সে যথাসত্বর উপদেশ গ্রহণ করবে تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ মহামহিমান্বিত তিনি যাঁর হাতে রয়েছে সার্বভৌম কর্তৃত্ব قَالَ الَّذِينَ أَشْرَكُوا যারা অংশী দাঁড় করায় তারা বলে
৪. মাফ’উল হিসাবে أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُونَ আমি জানি, যা তোমরা জান না أَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ আমি জানি যা তোমরা প্রকাশ করো خُذُوا مَا آتَيْنَاكُمْ بِقُوَّةٍ তোমাদের আমরা যা দিয়েছি তা দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করো أَرَأَيْتَ الَّذِي يَنْهَىٰ عَبْدًا আপনি কি তাকে দেখেছেন, যে নিষেধ করে এক বান্দাকে أَرَأَيْتَ الَّذِي يُكَذِّبُ بِالدِّينِ আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে? يَعْلَمُونَ مَا تَفْعَلُونَ তারা জানে তোমরা যা-কিছু কর يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ তিনি যাকে ইচ্ছা এটা দান করেন خَلَقَ لَكُم مَّا فِي الْأَرْضِ তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে
৫. সিফাহ হিসাবে النَّبَإِ – الَّذِي هُمْ فِيهِ مُخْتَلِفُونَ মহা সংবাদ – যে বিষয়ে তারা মতানৈক্যের মধ্যে রয়েছে لِّلْمُكَذِّبِينَ – الَّذِينَ يُكَذِّبُونَ بِيَوْمِ الدِّينِ মিথ্যারোপকারীদের প্রতি- যারা বিচারের দিনকে মিথ্যা ভেবেছে اللَّهِ – الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْض আল্লাহ- যাঁর রয়েছে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সার্বভৌম কর্তৃত্ব رَبِّكَ – الَّذِي خَلَقَ فَسَوَّىٰ আপনার রব – যিনি সৃষ্টি করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন الْأَشْقَى – الَّذِي يَصْلَى النَّارَ الْكُبْرَىٰ হতভাগা- যে মহা-অগ্নিতে প্রবেশ করবে الْأَوْتَادِ – الَّذِينَ طَغَوْا فِي الْبِلَادِ সেনাদল – যারা দেশে সীমালঙ্ঘন করেছিল। الْأَشْقَى –الَّذِي كَذَّبَ وَتَوَلَّىٰ হতভাগ্য ব্যক্তি – যে মিথ্যারোপ করেছে ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে الْأَتْقَى – الَّذِي يُؤْتِي مَالَهُ يَتَزَكَّىٰ ধর্মভীরু -যে আত্নশুদ্ধির জন্যে তার ধন-সম্পদ দান করে وِزْرَكَ – الَّذِي أَنقَضَ ظَهْرَكَ আপনার বোঝা- যা চেপে বসেছিল আপনার পিঠে رَبُّكَ – الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ আপনার রব -যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলমের সাহায্যে رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ আপনার রব – যিনি সৃষ্টি করেছেন هُمَزَةٍ – الَّذِي جَمَعَ مَالًا وَعَدَّدَهُ পরনিন্দাকারী – যে ধনসম্পদ জমা করছে এবং তা গুনছে رَبَّ – الَّذِي أَطْعَمَهُم مِّن جُوعٍ রব- যিনি ক্ষুধায় তাদের আহার দিয়েছেন لِّلْمُصَلِّينَ- الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ নামাযীর – যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর الْوَسْوَاسِ- الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে لِّلْمُصَلِّينَ- الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُونَ নামাযীর – যারা নিজেরাই হচ্ছে লোক-দেখিয়ে ذَّٰلِكَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا এটা হলো সেসব লোকের উদাহরণ; যারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে ।
৬. মুদফ ইলাইহি হিসাবে مَّثَلُ الَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ যারা তাদের প্রভুকে অস্বীকার করেছে তাদের উপমা হচ্ছে.. صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِي اسْتَوْقَدَ نَارًا তাদের অবস্থা সে ব্যক্তির মত, যে লোক কোথাও আগুন জ্বালালো
৭. ইসম ইন্না হিসাবে إِنَّ لَكُمْ مَا سَأَلْتُمْ নিশ্চয় তোমরা যা চাও তাই পাবে إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ নিশ্চয় যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের নির্যাতন করেছে إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا
৮. মাজরূর হিসাবে فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الْكِتَابَ بِأَيْدِيهِمْ ذَٰلِكَ لِمَنْ خَشِيَ رَبَّهُ এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় করে لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْذِبُونَ তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, যেহেতু তারা মিথ্যা বলতো آمِنُوا بِمَا أَنزَلْتُ আমি যা অবতারণ করেছি তাতে তোমরা ঈমান আনো